- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মিশরের নতুন রাজধানী,ঢাকা থেকে দ্বিগুণ বড়।
মিশরের বর্তমান রাজধানী কায়রো থেকে বরাবর ৪৫ কিলোমিটার পূর্বদিকে তৈরি হতে যাচ্ছে নাম নির্ধারিত না হওয়া মিশরের নতুন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রাজধানী। ২০১৫ সালের মিশরের অর্থনীতি মোতায়েনের সম্মেলন মিশরের হাউজিং মন্ত্রী মোস্তফা কামাল মাদবৌলি নতুন এই শহর ঘোষণা দেন। শহরটির অবস্থান এর পুরনো রাজধানী কায়রো এবং নিউ কায়রো থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তেমনি কায়রো শহরের পাশ দিয়ে চলে গেছে সুয়েজখাল বন্দরে বরাবর ৭০০ স্কয়ার কিলোমিটার বা ঢাকা শহর থেকে দ্বিগুন এর চেয়েও বড় শহরটি হতে যাচ্ছে মিশরের নতুন অর্থনৈতিক রাজধানী সরকারি আমলাদের সবচেয়ে বড় আবাসস্থল এবং বিদেশি যত এম্বেসী আছে সবই নতুন শহরে স্থানান্তরিত করা হবে । মিশরের এই শহরটি সরাসরি ৬৫ থেকে ৭০ লক্ষ মানুষের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। ৭০০ স্কয়ার কিলোমিটার এই শহরটি সরাসরি তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে এবং প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি কাজ শেষ হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ হয়েছে সব মিলিয়ে ২৫টি রেসিডেন্সিয়াল জেলা এবং ২৫টি জেলা সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড। তৈরি হতে যাচ্ছে নতুন একটি মিশরের আইকনিক টাওয়ার বরাবর তিন বিলিয়ন ডলার খরচে। এই টাওয়ারের উচ্চতা হবে ১২৬৬ ফিট ৮০ তলা বিশিষ্ট হিসেবে বর্তমান আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু ভবন। যেই ভবনটির জন্ম দেবে সব মিলিয়ে ৭.১ বর্গমিটার এলাকা। এরই মধ্যে এই ভবনটি বেসমেন্ট থেকে উপরের অংশের বেশিরভাগ অংশের কাজ শেষ হয়ে গেছে। নতুন শহর আইকনিক টাওয়ার তৈরি করে ক্ষান্ত নয় মিশর। দ্বিতীয় ধাপে তারাও তৈরি করতে যাচ্ছে অবিলিস্ক ক্যাপিটাল আরেকটি উঁচু ভবন। মূলত অবিলিস্ক ক্যাপিটাল পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন।৩২৪১ ফিট বা ১০০০ মিটার উঁচু এই টাওয়ার হবে ১৬৫ তলা বিশিষ্ট আকাশচুম্বী অট্টালিকা এই ভবনটি সরাসরি ১২ লক্ষ ৫০ হাজার ফ্লোর জন্ম দিবে। ভবনের ডিজাইন উরিবাবা কপি করা হয়েছে গিজার ডিজাইন থেকে।
নতুন এই শহরে একটি সেন্ট্রাল পার্ক তৈরি করতে চাচ্ছে মিশর সরকার। যার আয়তন হবে ৩৫ স্কয়ার কিলোমিটার।শহরের তৃতীয় ধাপের কাজ যখন শেষ হয়ে যাবে তখনই পার্কের আয়তন গিয়ে দাঁড়াবে ৭০ঃকিলোমিটার। এই আয়তনটা নিউইয়র্ক সেন্ট্রাল পার্কের আয়তনের চেয়ে দ্বিগুণ বড়। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি মিলিয়ে বরাবর ২০০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ চলছে। একই সাথে এখানে মিশর তৈরি করতে চাচ্ছে তাদের সবচেয়ে বড় টেকনোলজি ইনোভেশন পার্ক। যে পার্ক তাদের নেক্সট জেনারেশন মর্ডান ডিজিটাল ইকোনমিকে এর নেতৃত্ব দিবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে সরকার তৈরি করতে চাচ্ছে ৬৬৩টি হসপিটাল ও ক্লিনিক। যা সবগুলি সরকারের উদ্যোগে। এটা নিশ্চিত যে সরকারি এইসব হসপিটাল এর বাইরে বেসরকারি হসপিটাল গুলো যখন তৈরি হওয়া শুরু করবে এই সংখ্যাটির দ্বিগুণ এরবেশি হবে। ধর্মীয়ভাবে মিশরে রয়েছে সবচেয়ে বেশি মুসলিম তারপর অবস্থান করছে খ্রিষ্টান। সরকারি উদ্যোগে মিশর তাদের নতুন শহরে তৈরি করতে যাচ্ছে ১২৫০ ধর্মীয় উপাসনালয়। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মসজিদ।
মিশর তথা আফ্রিকার আফ্রিকার সবচেয়ে বড় মসজিদ মিশর এই শহরের তৈরি করতে যাচ্ছে। বিশাল এ মসজিদের নাম হতে যাচ্ছে এল-ফাত্তাহ আল-আলীম মস্কোই। বরাবর ১১০ একর ৪ লক্ষ ৫০হাজার স্কয়ার মিটার আয়তনের জায়গার উপর এ মসজিদটি হতে যাচ্ছে। ১৭ হাজার মানুষের একসাথে নামাজ আদায় করার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মসজিদ। মসজিদটিতে তৈরি করা হবে ৪ মিনার এবং ২১ টি গম্বুজ। মসজিদের যে ৪ মিনারের উচ্চতা হবে ৯৫ মিটার উঁচু।
ফাইভস্টার থেকে সাধারণ সাধারণ মান পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৪০ হাজার হোটেল রুম তৈরি করার কাজ চলছে নতুন এই শহর। যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হবে আলমাসা হোটেল।প্রথম পর্যায়ে তৈরি করতে চাওয়া ৫০,০০০ বাড়ির মধ্যে ৫০০০ সরাসরি বিক্রি হয়ে গেছে। পুরো প্রজেক্টে থাকা এসব বাড়িঘরগুলো অত্যন্ত আধুনিক এবং সত্যিকার অর্থে ইউরোপ-আমেরিকার বিলাসী সব বাড়িঘর থেকে উন্নত। পুরো শহরটিকে বাস্তবতায় একটি স্মার্ট সিটিতে পরিণত করা হচ্ছে।
বিশাল সংখ্যা রেসিডেন্সিয়াল,রেসিডেন্সিয়াল না মানুষগুলো এন্টারটেইনমেন্টের জন্য। এখানে তৈরি করা হচ্ছে অন্তত তিনটি স্টেডিয়াম ।সবগুলো স্টেডিয়াম মিলে মোট ৯০ হাজার আসন সংখ্যা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিনোদন ও মিশর পর্যটনশিল্পকে আরো বেশি আকৃষ্ট করার জন্য। এখানে একটি থিম পার্ট তৈরি করা হচ্ছে। আয়তনের দিক থেকে থিম পার্ট ডিজনিল্যান্ড থেকে চার গুণ বড়। সড়ক যোগাযোগ দিক থেকে পুরাতন কায়রো শহর এবং নতুন কায়রো শহর সাথে সাথে যোগ করে তৈরি করা হচ্ছে কি শহরের জন্য ডিরেক্ট হাই স্পিড ট্রেন। এবং পুরো শহর এর জন্য থাকছে মেট্রো ট্রেনের ব্যবস্থা। বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর তৈরির কাজ চলছে। একই সাথে এই শহরের তৈরি করা হচ্ছে মিশরের বিমান বাহিনীর জন্য আরেকটি বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে।মিশরের নতুন এই শহরের তৈরি হতে যাচ্ছে দ্য অষ্টকাগন।এটি মূলত মিশরের রাজ্য কৌশলগত কমান্ড কেন্দ্র।দ্য অষ্টকাগন হবে আমেরিকার পেন্টাগনের অন্যরূপ। আয়তনের দিক থেকে দ্য অষ্টকাগন মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অবকাঠামো হতে যাচ্ছে।
মিশর তাদের নতুন শহর তৈরি করার পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে পুরনো কায়রো শহর বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি যানজটের শহর হচ্ছে কায়রো। প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষের বসবাস পুরনো কায়রো শহরে তেমনি ঘন্টায় গাড়ি চলাচলের গড় গতি হচ্ছে মাত্র ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার। তাই মিসর সরকার বাধ্য হয়ে কায়রো শহর স্থানান্তর করতে যাচ্ছে।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন